।। মহাকাল স্পোর্টস ডেস্ক |
গ্রীষ্মের দলবদলের বাজার বন্ধ হওয়ার আগে নতুন আর কোনো খেলোয়াড় কেনা হবে না- স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন রিয়াল মাদ্রিদের কোচ কার্লো আনচেলত্তি। ফলে পরের মৌসুমেও পিএসজিতেই থাকতে হবে ফরাসি ফরোয়ার্ড কিলিয়ান এমবাপ্পেকে।
আজ এক সংবাদ সম্মেলনে এবারের গ্রীষ্মে নতুন সাইনিং নিয়ে প্রশ্ন করা হলে আনচেলত্তি বলেন, ‘না, কোনো সম্ভাবনা নেই। শতভাগ না। বাজার বন্ধের আগে নতুন কোনো সাইনিং হবে না- স্কোয়াড বন্ধ। ‘
গত কয়েক মৌসুম ধরেই এমবাপ্পে ও রিয়াল মাদ্রিদকে জড়িয়ে দলবদলের গুঞ্জন ছড়িয়েছে। এমবাপ্পে নিজে যেমন রিয়ালে যোগ দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন, স্প্যানিশ জায়ান্টরাও ইচ্ছের কথা লুকিয়ে রাখেনি। আলোচনাও এগিয়ে গিয়েছিল অনেকদূর। এমনকি ২০২২ সালে তো প্রায় চুক্তি স্বাক্ষরের পর্যায়েই চলে গিয়েছিল দুই পক্ষ। কিন্তু ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাঁখোর হস্তক্ষেপে যে যাত্রায় প্যারিসেই থেকে যান এমবাপ্পে। ২০২২ বিশ্বকাপের আগে পিএসজির সঙ্গে নতুন চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন তিনি।
বিশাল অঙ্কের চুক্তিতে এমবাপ্পেকে রেখে দিলেও স্বস্তিতে নেই পিএসজি। তাকে ঘিরে দল সাজালেও কাঙ্ক্ষিত সাফল্য আসেনি গত মৌসুমে। এমনকি বার্সেলোনা থেকে লিওনেল মেসিকে দলে ভিড়িয়েও অবস্থার খুব একটা পরিবর্তন হয়নি। বরং মেসি ও নেইমারের সঙ্গে এমবাপ্পের বরফশীতল সম্পর্ক অনেকবারই প্রকাশ্যে চলে এসেছে। অবশ্য গত মৌসুম শেষে মেসি ও নেইমার দুজনেই মাসখানেকের ব্যবধানে পিএসজি ছেড়ে ভিন্ন ভিন্ন মহাদেশের ক্লাবে পাড়ি জমিয়েছেন। মেসি গেছেন মেজর লিগ সকারের ক্লাব ইন্টার মায়ামিতে এবং নেইমার সৌদি ক্লাব আল হিলালে। কিন্তু পিএসজির সমস্যা তাতেও কমেনি।
কিছুদিন আগেই প্রকাশ্যে আসে, এমবাপ্পে কিছুতেই পিএসজিতে থাকতে রাজি নন। তার মূল আগ্রহের জায়গা রিয়াল মাদ্রিদ। তার এমন অবস্থান দেখে পিএসজির পক্ষ থেকে তাকে বিক্রির চেষ্টাও চলে। কিন্তু রিয়ালের পক্ষে এখন অত অর্থ খরচ সম্ভব নয়। এই সুযোগে রেকর্ড ৩০ কোটি ইউরোর প্রস্তাব নিয়ে আসরে নামে সৌদি আরবের ক্লাব আল হিলাল। নেইমারের আগে এমবাপ্পেকেই পাওয়ার চেষ্টা চালিয়েছিল তারা। পিএসজির পক্ষ থেকেও সবুজ সংকেত দেওয়া হয় সেই প্রস্তাবে। কিন্তু ২৪ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড সেই প্রস্তাবে রাজি হননি।
এমবাপ্পের সঙ্গে পিএসজির চুক্তির মেয়াদ আরও এক বছর বাকি আছে। এমবাপ্পে নতুন চুক্তি না করার কথা আগেই পিএসজিকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। ২০২৪ সালে ফ্রি এজেন্ট হিসেবে তিনি রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দিতে পারেন- এমন আভাস পেয়েছে পিএসজি। তাই জাপানে প্রাক মৌসুম সফরে না পাঠিয়ে এমবাপ্পেকে দলবদলের বাজারে তুলেছিল তারা।
এমবাপ্পেকে রিয়ালের কাছে বেচে দেওয়ার চেষ্টাও করেছে পিএসজি। কিন্তু এজন্য নাকি ২৫০ মিলিয়ন ইউরো দাম হাঁকিয়েছিল তারা। এক মৌসুম পরে যাকে ফ্রিতেই পাওয়া যাবে, তার জন্য এত অর্থ খরচের কথা হয়তো ভাবছে না রিয়াল। যে কারণে মৌসুম শেষের অপেক্ষায় আছে রিয়াল। কিন্তু পিএসজি চেয়েছিল চুক্তির মেয়াদ থাকতেই তাকে বিক্রি করে বড় অঙ্কের অর্থ আয় করতে। তবে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন এমবাপ্পে নিজেই।
এমবাপ্পের সিদ্ধান্ত কার্যত রিয়ালের পক্ষেই গেছে। স্প্যানিশ জায়ান্টরা এ নিয়ে আর আগ্রহ দেখাচ্ছে না। পিএসজিও হয়তো আশা ছেড়ে দিয়েছে। হাল ছেড়ে দিয়ে এমবাপ্পেকে মূল একাদশেও ফিরিয়েছে ফরাসি চ্যাম্পিয়নরা। অন্তত আরও এক মৌসুম এই ক্লাবের জার্সিতেই দেখা যাবে তাকে। বিষয়টি আরও নিশ্চিত হলো আনচেলত্তির বক্তব্যে। তবে পরের মৌসুমে আনচেলত্তি নিজে রিয়ালে থাকবেন না। তখন নতুন কোনো কোচের অধীনে রিয়ালের জার্সিতেই খেলতে দেখা যাবে এমবাপ্পেকে।
আপনার মতামত লিখুন :