স্বেচ্ছাচারিতায় লাটে উঠেছে বাকেরগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের কার্যক্রম; সহায়-সম্বল হারাচ্ছেন সাধারণ মানুষ
।। এসএম জুয়েল রানা।।
চাহিদা অনুযায়ী বখরার টাকা না দেয়ায় বাকেরগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের অপচিকিৎসা এবং খামখেয়ালিপনার কারণে এক নারীর ২ লাখ টাকা মূল্যের গর্ভবতী গাভীর মারা গেছে। গত ৮ মার্চ উপজেলার রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের ফলাঘর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
এ বিষয়ে শেষ সম্বল হারানো ভুক্তভোগী নারী শিখা রাণী রায় গত ১০ মার্চ বাকেরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার, বরিশালের জেলা প্রশাসক এবং খামার বাড়ি সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, শিখা রাণী রায়ের একটি গাভীর গর্ভজনিত অসুস্থতা দেখা দেয়। এরপর তিনি ছুটে যান উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের অফিসে। সেখানে গিয়ে ভেটেনারি চিকিৎসক আমিরুল ইসলাম সোহাগের কাছে গাভীর চিকিৎসার জন্য অনুরোধ করেন। গাভীর চিকিৎসার জন্য ১৫০০ টাকা বখরা দাবী করেন সোহাগ। এরপর শিখা রাণী ১০০০ টাকা দেয়ার সামর্থ্যের কথা জানিয়ে অনুনয় করে বলেন- ”স্যার আমরা ডাল-ভাত খেয়ে বাঁচা মানুষ, এর বেশি আর সাধ্য নাই।” কিন্তু নাছোরবান্দা ধান্ধাবাজ চিকিৎসক আমিরুল ইসলাম সোহাগ ১৫০০ টাকা ছাড়া গাভীর চিকিৎসা দিতে নারাজে অটল থাকেন।
এধরণের অসহনীয় পরিস্থিতির শিকার হয়ে ছুটে যান উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার সালেহ আল রেজার কাছে। তিনি ১০০০ টাকায় চিকিৎসা দিতে রাজি হন। তিনি চিকিৎসক নন তবু অফিসের পিয়ন জসিম উদ্দিন কে নিয়ে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি চিকিৎসার নামে টানাহেঁচরা করে গর্ভবতী গাভীর পেটের বাচ্চা মেরে ফেলেন। অপচিকিৎসায় সেফটি সেমিয়া রোগে আক্রান্ত হয় গাভীটি। এঘটনার পর বারবার ধর্ণা দেন ভুক্তভোগী নারী শিখা রাণী রায়। কিন্তু তাতে কোনো কর্ণপাত করেননি উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার সালেহ আল রেজা।
সর্বেশষ গত ৮ মার্চ গাভীটি মারা যায়। এতে শেষসম্বল হারিয়ে দিশাহীন হয়ে পড়েন শিখা রাণী রায়। পরে নিরুপায় হয়ে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনি প্রতিকার চেয়ে ক্ষতিপূরণের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেন তিনি।
এবিষয়ে জানতে ৩দিন উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের অফিসে গিয়ে ভেটেনারি চিকিৎসক আমিরুল ইসলাম সোহাগের দেখা মেলেনি।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার সালেহ আল রেজা বলেন- ”আমি চিকিৎসা বিষয়ে অজ্ঞ। একারণে অফিসের পিয়ন এবং ড্রেসারদের দিয়ে চিকিৎসার কাজ করানো হয়। এছাড়া ভেটেনারি চিকিৎসক আমিরুল ইসলাম সোহাগের বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।