।।স্টাফ রিপোর্টার, বাকেরগঞ্জ।।
ধর্মীয় প্রণোদনায় অভিসিক্ত, সমাজসেবক, নারীশিক্ষা প্রসারের অন্যতম অগ্রদূত, ঐতিহ্যবাহী ছোফরোননেছা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রধান শিক্ষক বিশিষ্টজন আব্দুল লতিফ মিয়ার দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ (১৭ মে)।
জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সকলের কাছে একজন সৎ-আদর্শবান মানুষ হিসেবে সমাদৃত এই মহৎ ব্যক্তির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
এরমধ্যে বরিশাল বাকেরগঞ্জের রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের ফলাঘর গ্রামের কালীগঞ্জ বাজার এলাকায় ছোফরোননেছা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে রোববার (১৮ মে) আলোচনা সভা, মিলাদ ও দোয়া অনুষ্ঠান হবে।
বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা ছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এই অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহন করবেন।
অনন্য ব্যক্তিত্বের অধিকারী এই মহান ব্যক্তির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তার ছেলে বিএনপি নেতা মাসুদ মিয়া তার ফেসবুক পেজে একটি বিশেষ পোাস্ট দিয়েছেন। কোনো প্রকার সম্পাদনা ছাড়াই পোস্টটি সকলের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলোঃ-
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম। আসসালামু আলাইকুম। আজ আমার বাবার দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী। মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে ফরিয়াদ। এই মহান মানব কে তোমার কুদরতি ক্ষমতায় ক্ষমা করে দিয়ে জান্নাতের সু মহান উচ্চতায় স্থান দিও। আমার বাবা একজন অতি সাধারণ ও ভালো মানুষ ছিলেন। তারপরেও দোষে গুনে মানুষ। দোষ গুলো ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।কোন মানুষই ১০০% সফল হয় না। একটা মানুষ কতটা দয়ালু ও পরোপকারী হইলে নিজ সম্পদ বিক্রি করে ছেলে মেয়েদের ভবিষ্যৎ না ভেবে সমস্ত কিছু উজাড় করে একটি অনগ্রসর নারী সমাজকে আলোর পথ দেখাতে প্রতিষ্ঠা করেন। তারই নিজ মার নামে ছোফরোননেছা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়। তার চরম সমালোচকও বিশ্বাস করে তার জন্য অত্র এলাকার নারী সমাজ আজ শিক্ষিত হয়েছে। আমার বাবার সততা ও পরোপকারী কথাগুলো মৃত্যুর পরে লোকমুখ শোনা যায়।তার মৃত্যুর পরে তার প্রয়োজনীয়তা অত্র এলাকার মানুষ অনুভব করছে। সকলের কাছে অনুরোধ এখনো যার বাবা মা জীবিত আছে এই সম্পদকে মূল্যায়ন করুন।। হারালে বুঝবে কতটা অসহায়।# বাবার সততাও সন্তানদের শাসনের ছোট একটি উদাহরণ দিলাম।আমাদের কালিগঞ্জ বাজার টা খুব বড় একটি বাজার। সপ্তাহে একদিন বৃহস্পতিবার হাট বসে। ছোটবেলা দেখতাম অনেক পাইকার বুধবার রাত্রে বাজারে এসে অবস্থান নিত। তখন কাছাকাছি কোন ব্যাংক ছিল না। তাই তাদের কাছে গচ্ছিত টাকাগুলো আমাদের বাড়িতে এসে বাবার কাছে আমানত রাখতো। বাবা টাকাগুলো সিরিয়াল নাম্বার ও নাম লিখে রাখতো।আমাদের বাসাটা বাজারের একদম সাথেই। সকাল হলে আবার টাকা নিয়ে যেত। এগুলো দেখে মা এবং আমরা কিছুটা হলেও বিরক্ত হতাম। বলতাম পরের ঝামেলা কেন আমরা মাথায় নিব।বাবা বলতো মানুষের উপকার ও আমানত রক্ষা করা পবিত্র দায়িত্ব। ছোটবেলা খুব দুষ্ট ছিলাম একবার বন্ধুদের সাথে নিয়ে একটি অন্যায় কাজ করি। বাবার কাছে বিচার আসে আমি গা ঢাকা দেই।সকাল বেলা আব্বা স্কুলের কাজে বরিশাল চলে গেছে। মার কাছে বলে গেছে আমি যেন এসে শুনি ওই লোকের কাছে গিয়ে মাসুদ ক্ষমা চেয়ে এবং ক্ষতিপূরণ দিয়ে এসেছে। আর যদি আমার কথা মত সে না করে তাহলে আর আমি বাড়িতে ঢুকবো না।( আমি তার কথামতো) এরকম এক বাবার সন্তান হয়ে নিজেকে ধন্য মনে করি। আমার লেখার ভুল ত্রুটি ক্ষমা সুন্দরদৃষ্টিতে দেখবেন। পরিশেষে তার বিদায়ি আত্মার মাগফেরাত কামনা করে সকলের কাছে বাবা মার জন্য দোয়া চেয়ে বিদায় নিলাম আল্লাহ হাফেজ।
আপনার মতামত লিখুন :