সারাদেশে একযোগে ভূমি মেলা শুরু; চলছে সরাসরি ভূমি সেবা প্রদান কার্যক্রম


admin প্রকাশের সময় : মে ২৫, ২০২৫, ৯:০৩ অপরাহ্ন /
সারাদেশে একযোগে ভূমি মেলা শুরু; চলছে সরাসরি ভূমি সেবা প্রদান কার্যক্রম

।।স্টাফ রিপোর্টার।।
ভূমির প্রকৃত মালিকানা নিশ্চিত করে নাগরিক দুর্ভোগ কমাতে সারাদেশে একযোগে শুরু হয়েছে ভূমি সেবা সপ্তাহ। এতে সরাসরি সেবা নিতে কেন্দ্রগুলেতে ভিড় করেন সাধারণ মানুষ। আর তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর এমন সেবা চালু হওয়ায় স্বস্তি সেবা প্রত্যাশীদের মাঝে।

এছাড়া ভূমি সেবা সপ্তাহে জনগণকে ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধে উদ্বুদ্ধ করা এবং সচেতন বাড়াতে সারা দেশে ২৫ মে শুরু হয়েছে তিন দিনের ভূমি মেলা।

এবারের ভূমি মেলার প্রতিপাদ্য ‘নিয়মিত ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করি, নিজের জমি সুরক্ষিত রাখি’। মেলার স্টল থেকে নাগরিকদের ভূমি সংক্রান্ত সব সেবা প্রদান করা হবে।

বৃহস্পতিবার (২২ মে) বিকালে সংবাদ সম্মেলনে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এএসএম সালেহ আহমেদ এ তথ্য জানান।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান এজেএম সালাউদ্দিন নাগরী; ভূমি আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান মুহম্মদ ইব্রাহিম; ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. সাইদুর রহমান।

ভূমি সচিব বলেন, বাংলাদেশের ভূমি সেবা ডিজিটাল রূপান্তরের মধ্য দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। ভূমিসেবায় ডিজিটালাইজেশন কার্যক্রম নাগরিকদের জন্য স্বস্তিদায়ক। হয়রানি মুক্ত ও জনবান্ধব ভূমিসেবা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে ভূমি মন্ত্রণালয় বদ্ধপরিকর। সে লক্ষ্য অর্জনে ভূমি মন্ত্রণালয় প্রযুক্তিগতভাবে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। নামজারি, ভূমি উন্নয়ন কর, পর্চা ও নকশা সংগ্রহ ব্যবস্থাপনা শতভাগ অনলাইনভিত্তিক ও ক্যাশলেস করা হয়েছে। যেকোনো নাগরিক পৃথিবীর যেকোনো প্রান্ত থেকে যেকোনো সময় (২৪/৭) সপ্তাহের সাত দিন দিনরাত চব্বিশ ঘণ্টাই কলসেন্টার ও নাগরিক ভূমিসেবা কেন্দ্রের মাধ্যমে সেবা গ্রহণ করতে পারছেন।

সিনিয়র সচিব বলেন, দেশব্যাপী ভূমি উন্নয়ন কর শতভাগ অনলাইনে আদায়ের ফলে রাজস্ব আয় বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে অনলাইনে প্রতি মাসে প্রায় ৫ লাখ নামজারি মামলা নিষ্পত্তি করা হচ্ছে। সারা দেশের মোট ৫১৬টি উপজেলা ও সার্কেল ভূমি অফিস এবং ৩ হাজার ৪৬৭টি ইউনিয়ন ভূমি অফিসে ই-নামজারি চালু হয়েছে। এই সিস্টেমে জুলাই-২৪ থেকে ১৫ মে-২৫ পর্যন্ত প্রায় ২৯০ কোটি ২২ লাখ ৩০ হাজার টাকা, ভূমি উন্নয়ন কর থেকে প্রতিদিন ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা এবং অনলাইন খতিয়ান থেকে প্রতি মাসে গড়ে ৩ লাখ ২১ হাজার টাকা সরকারি কোষাগারে জমা হচ্ছে। বর্তমানে ৬ কোটি ৫০ লাখেরও অধিক খতিয়ান অনলাইনে রয়েছে। এ পর্যন্ত প্রায় ৫ কোটি ৭০ লাখ হোল্ডিং ডাটা ম্যানুয়াল থেকে ডিজিটালে রূপান্তরিত হয়েছে।

নাগরিককে অনলাইনে দাখিলা প্রদান করা হয়েছে প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ। প্রতিদিন সার্ভারসহ অন্যান্য ব্যবস্থা সচল থাকলে দিনে ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা ভূমি উন্নয়ন কর আদায় করা সম্ভব।

সালেহ আহমেদ আরও জানান; প্রতিদিন ই-পর্চা থেকে সরকারের কোষাগারে প্রায় ১৪ থেকে ১৮ লাখ টাকা জমা হয়। জুলাই-২৪ থেকে মে-২৫ পর্যন্ত ই-পর্চা থেকে সরকারের কোষাগারে জমা পড়েছে ৪৫ কোটি টাকা। ডাক বিভাগের মাধ্যমে এ পর্যন্ত প্রায় ১২ লাখ খতিয়ান এবং ১১ হাজারেরও অধিক মৌজা ম্যাপ জনগণের ঠিকানায় পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। ইউনিয়ন ভূমি অফিসগুলোর কর্মপরিবেশ উন্নতকরণ ও রেকর্ডপত্র সংরক্ষণ সুবিধা বৃদ্ধিকরণের লক্ষ্যে সারা দেশে ১ হাজার ৩৩০টি ইউনিয়ন ভূমি অফিস নির্মাণ করা হবে এবং ১৫০টি সমন্বিত উপজেলা ভূমি কমপ্লেক্স নির্মাণকল্পে ডিপিপি প্রণীত হয়েছে।

ভূমি সচিব বলেন, ভূমি জরিপ একটি জটিল কাজ। এই কাজ কম সময়ে নির্ভুলভাবে করার জন্য ড্রোন ব্যবহার করা হবে। খুব প্রয়োজন ছাড়া ভূমি অফিসে যেতে হবে না। এনআইডি দিয়েই পাওয়া যাবে জমির সব তথ্য।