রাজনীতি

বাংলাদেশের নির্বাচনে হাসিনাকে সমর্থন করছে ভারত-চিন, কিন্তু কেন? ভারতীয় সংবাদপত্রের বিশ্লেষণ

বাংলাদেশ কৌশলগত কারণের বদলে জাতীয় স্বার্থের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ সম্পর্ককে অগ্রাধিকার দেয়। ভারতের সঙ্গে হাসিনার সম্পর্ক অত্যন্ত ভালো। এই ব্যাপারে তিনি পারদর্শিতার পরিচয় দিয়েছেন। তাঁর কৌশলগত স্বায়ত্তশাসনের মতবাদ বৃহৎ রাষ্ট্রগুলোর কাছেও অনুকরণীয়।

।। মহাকাল নিউজ ডেস্ক ।।
৭ জানুয়ারি বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সমর্থন ছিল বাংলাদেশের দিকে। আর, পাকিস্তানের প্রতি ছিল চিনের সমর্থন। বর্তমানে ভারতের পাশাপাশি চিনও বাংলাদেশের অগ্রগতিতে সহায়তা করছে।

স্বাধীনতার ৫২ বছর পর, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ও ভূ-রাজনৈতিক ক্ষেত্রে পরিবর্তনের পরিস্থিতিতে রয়েছে। এর অর্থনৈতিক গুরুত্ব ক্রমশ বাড়ছে। যার পরিমাণ প্রায় ৪০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০২২ সালে এই অর্থনীতি ৭.১% হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। যা বিশ্বের প্রধান শক্তিগুলোকে বাংলাদেশের (Bangladesh) প্রতি আকৃষ্ট করেছে।

বাংলাদেশ তার বৃদ্ধি এবং স্থিতিশীলতার জন্যই ভারত তথা দক্ষিণ এশিয়ায় কৌশলগত স্বার্থকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে। আর, সেই কারণেই ৭ই জানুয়ারি বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনের ওপর বিশ্বের বিভিন্ন দেশ নজর রাখছে। ভারতের বাফার স্টেট বাংলাদেশ, বর্তমানে চিনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ভিশন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত স্বার্থ থেকে রাশিয়ার পরিকাঠামোগত স্বার্থ- সব কিছুর সঙ্গেই জড়িত। এই পরিস্থিতিতে বিরোধীরা হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে স্বৈরাচার ও রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের ওপর দমন-পীড়ন চালানোর অভিযোগ করেছে। পালটা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চতুর্থ মেয়াদে ক্ষমতায় আসতে চাইছেন। ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের আগের নির্বাচনগুলো অনিয়মের অভিযোগে ভেস্তে গিয়েছিল।

ভারত এবং চিন উভয়েরই নির্বাচনী প্রক্রিয়ার ফলাফল এবং বিশ্বাসযোগ্যতায় উচ্চ অংশীদারিত্ব রয়েছে, শুধুমাত্র বাংলাদেশে তার দৃঢ় অর্থনৈতিক সম্পর্কের কারণেই নয়, এই অঞ্চলে বৃহত্তর প্রতিদ্বন্দ্বিতার আলোকেও এই সম্পর্ক অমলিন। এশিয়ার দুই জায়ান্ট (ভারত ও চিন)-এর কাছ থেকে ঢাকা কীভাবে অংশীদারিত্বের প্রত্যাশাগুলো আদায় করে নেয়, তা গুরুত্বপূর্ণ। আর, সেটা আন্তর্জাতিকভাবে দেখার বিষয়। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সমর্থন ছিল বাংলাদেশের দিকে। আর, পাকিস্তানের প্রতি ছিল চিনের সমর্থন। এই ইতিহাস সত্ত্বেও, বাস্তববাদ দুই প্রতিবেশী ভারত ও চিনের সঙ্গে বাংলাদেশের বর্তমান সম্পর্ককে নির্ধারণ করছে।

২০২১-২২ সালে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ১৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছে। বাংলাদেশ ভারতের একটি গুরুত্বপূর্ণ পূর্বাঞ্চলীয় বাফার স্টেট হিসেবে স্বীকৃত। বন্দর ও পাওয়ার গ্রিডের ক্ষেত্রে উভয়ের গুরুত্বপূর্ণ সহযোগিতা রয়েছে। যা জাতীয় স্বার্থের জন্য প্রয়োজনীয়। ঐতিহাসিক বন্ধন এবং ভৌগলিক নৈকট্য দুই দেশের মধ্যে এক বাণিজ্য সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। অন্যদিকে, চিনের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিমুখী বাণিজ্য ২০২২ সালে ২৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছে। বাংলাদেশ কৌশলগতভাবে চিনেরও পাশে রয়েছে। চিনের মেগা প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশের অগ্রগতি ঘটছে। বাংলাদেশের পরিকাঠামো প্রকল্পে চিনের বিনিয়োগ ইতিমধ্যে ১০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button