এমপি’র নির্দেশ উপেক্ষিত; থামছেই না বাকেরগঞ্জের মহাসড়কে চাঁদাবাজি
।।নিজস্ব প্রতিবেদক, (বাকেরগঞ্জ) বরিশাল।।
বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কের বাসস্ট্যান্ডে পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চাঁদাবাজি এখন প্রকাশ্যে চলছে। এমপি’র নির্দেশের পরও থামছেই না দীর্ঘ বছর ধরে চলে আসা মহাসড়কের এই চাঁদাবাজী।
সমাজের অপরাধ দমনের দায়িত্ব যাদের ঘাড়ে, সেই পুলিশের মধ্যেই ভীষণভাবে বাড়ছে অপরাধপ্রবণতা। রক্ষক থেকে ভক্ষক হওয়ার এসব ঘটনায় পুলিশের বিভিন্নপর্যায়ের কর্মকর্তারা সহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা এখন মহাসড়কের চাঁদাবাজিতে জড়িত।
মেজর জেনারেল (অবঃ) আবদুল হাফিজ মল্লিক আওয়ামী লীগদলীয় এমপি নির্বাচিত হয়ে মহাসড়কের চাঁদাবাজি বন্ধ করে প্রশংসিত হয়েছেন । তবে মহাসড়কে চাঁদাবাজি বন্ধে তার নির্দেশ এখন আর না মানায় কমছে না চাঁদাবাজি। দিন দিন আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে চাঁদাবাজরা।
অভিযোগ রয়েছে, এই চাঁদার ভাগ যায় সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তি, ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মী, দুর্নীতিগ্রস্ত পুলিশ সদস্য, পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন সংগঠনের নেতাসহ কয়েক ব্যক্তির হাতে। এ কারণে নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যের পক্ষ থেকে মহাসড়কে চাঁদা বন্ধের উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা এখনো বন্ধ হয়নি। বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কে পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন ও পুলিশের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও হয়রানির অভিযোগ দীর্ঘদিন থেকে। বরিশাল পটুয়াখালী মহাসড়কের বাকেরগঞ্জের অংশে জেলা ট্রাফিক পুলিশের বিরুদ্ধে মহাসড়কে নিয়মিত চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে। মহাসড়কে নিয়মিত চেকপোস্ট বসিয়ে প্রাইভেট কার সহ বিভিন্ন যানবাহন আটকে কাগজপত্র পরিক্ষার নামে নানা ধরনের হয়রানী সহ চাঁদাবাজী ইতোমসধ্যে দীর্ঘ সময় ধরে প্রতিষ্ঠিত হলেও কোন প্রতিকার নেই। জেলা ট্রাফিক পুলিশের কতিপয় সদস্যর বেপরোয়া চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন ট্রাক ও পিকআপ ভ্যান, অটোরিকশা, টমটম থ্রি হুইলার মালিক-চালকরাও।
দক্ষিণাঞ্চল থেকে ঢাকা, খুলনা, যশোর সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যাতায়াতের প্রবেশদ্বার বাকেরগঞ্জ মহাসড়কে পুলিশের বেপরোয়া চাঁদাবাজি প্রকাশ্যে চলছে। পাশাপাশি পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন নামে বাস গাড়ি ও মিনিবাস থেকে ৫০ টাকা করে চাঁদা তুলছে প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা প্রকাশ্যেই। বাকেরগঞ্জে আঞ্চলিক ও মহাসড়কের যানবাহন সহ যাত্রীদের নিরাপত্তা বিধান সহ দুর্ঘটনা রোধে কার্যক্রম পরিচালনার কথা কিন্তু এক্ষেত্রে চলছে বিপরিত কার্যক্রম। বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কে প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রীবাহী এবং মালবাহী যানবাহন চলাচল করে।
জেলা ট্রাফিক পুলিশ ও পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের বিরুদ্ধে যানবাহন থেকে প্রতিদিন চাঁদাবাজির অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এছাড়াও ২৫ ফেব্রুয়ারি বাসস্ট্যান্ড মহাসড়কের পাশে কথা হয় শ্রমিক ইউনিয়নের লাইন সেক্রেটারি রিয়াজ নামের ব্যক্তির সাথে। তিনি জানান- মহাসড়ক থেকে পরিবহন থেকে যে চাঁদা নেয়া হয়, সেই টাকা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের বরিশাল জেলার সভাপতির কাছে জমা দেওয়া হয়।
বাসস্ট্যান্ডের উত্তর পাশে মল্লিক মার্কেটের সামনে মহাসড়কে কথা হয় কয়েকজন ট্রাক চালকের সাথে তারা জানান, মামলা দেবার ভয় দেখিয়ে কিংবা কাগজপত্র দেখার নামে তারা নিয়মিত চাঁদা নিলেও কিছুই করার নেই বলে তাদের অভিযোগ। এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হয় অভিযুক্ত কনস্টেবল মনির,টিএআই আশরাফুল ও টিএআই আলমগীর হোসেনের কাছে। তারা সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব অভিযোগ স্বীকার করে ভুক্তভোগীদের টাকা ফেরত দেয়ার কথা বলেন। এ সময় তারা অনুরোধ করেন যেন সংবাদ প্রকাশ করা না হয়।